স্মার্ট বাংলাদেশের স্তম্ভ কয়টি ও কি কি
একটি দেশ সাধারণ থেকে স্মার্ট রাষ্ট্রে পরিণত হওয়া একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। স্মার্ট বাংলাদেশের গুরুত্ব অপরিসীম।বর্তমান প্রেক্ষাপট থেকে স্মার্ট প্রেক্ষাপটে পরিণত হওয়া, বাংলাদেশের উন্নয়নে মুখ্য বিষয়।কারণ এটি বর্তমান উপযোগিসহ ভবিষ্যৎ মুখি একটি পরিকল্পনা।
কারণ এই পরিকল্পনার মাধ্যমেই কোন রাষ্ট্র কোন একটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে জ্ঞানভিত্তিক বা উন্নত রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে উঠতে পারে।স্মার্ট বাংলাদেশ এর চারটি স্তম্ভ রয়েছে সেগুলো নিয়ে নিচে আলোচনা করা হলো।
সূচিপত্র : স্মার্ট বাংলাদেশের স্তম্ভ কয়টি এবং বিস্তারিত আলোচনা
- স্মার্ট বাংলাদেশের স্তম্ভ কয়টি ও কি কি
- স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে স্মার্ট নাগরিকতার গুরুত্ব
- স্মার্ট সরকার কিভাবে স্মার্ট রাষ্ট্র গঠন করতে পারে
- স্মার্ট অর্থনীতির মাধ্যমে স্মার্ট রাষ্ট্র গড়া
- স্মার্ট সমাজ ব্যবস্থা কিভাবে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে পারে
- ২০৪১ সালের ভিতরে জ্ঞানভিত্তিক ও উন্নয়নশীল সামাজ গঠন
- প্রযুক্তি নির্ভর শিল্প ও কৃষির মাধ্যমে স্মার্ট বাংলাদেশ গঠন
- প্রযুক্তি নির্ভর জবের মাধ্যমে স্মার্ট বাংলাদেশ
- ডিজিটাল দক্ষতার সাহায্যে কিভাবে স্মার্ট রাষ্ট্র গঠন সম্ভব
- স্বাস্থ্য সেবা ও শিক্ষায় স্মার্ট প্রযুক্তির ব্যবহার
- আমাদের শেষ কথা
স্মার্ট বাংলাদেশের স্তম্ভ কয়টি ও কি কি
স্মার্ট বাংলাদেশের স্তম্ভ মূলত ৪ টি।অন্যান্য রাষ্ট্রের ন্যায় স্মার্ট
রাষ্ট্রে পরিণত হয়ে বাংলাদেশও হতে পারে অধিক উন্নয়নশীল রাষ্ট্র বা উন্নয়নশীল
অর্থনীতিযুক্ত দেশ।কেননা প্রতি রাষ্ট্রের জন্যই সাধারণ থেকে স্মার্ট রাষ্ট্রে
পরিণত হওয়া একটি অধিক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, কারণ হলো স্মার্ট দেশ বাই স্মার্ট
রাষ্ট্রই শুধুমাত্র সারা বিশ্বের সঙ্গে আন্তর্জাতিক উন্নতির ন্যায় তাল মিলিয়ে
চলতে পারে কিংবা তাল মিলিয়ে আগাতে পারে। স্মার্ট বাংলাদেশের চারটি স্তম্ভ হলো
:
- স্মার্ট নাগরিক
- স্মার্ট সরকার
- স্মার্ট অর্থনীতি
- স্মার্ট সমাজ
এই চারটি স্তম্বই বাংলাদেশকে পারে স্মার্ট রাষ্ট্রে পরিণত করতে। প্রতিটি স্তম্ভ
বাংলাদেশকে অধিক উন্নয়নশীল এবং ঠিকভাবে উন্নতি করতে সাহায্য করবে,যদি এই চারটি
স্তম্ভ বাংলাদেশের বাস্তবায়ন করা হয়
বর্তমান পৃথিবীতে সবকিছুর ধরণই পরিবর্তন হয়ে গেছে। কেননা বিশ্ব কখনো একমুখি
চিন্তা ধারায় থাকে না। সবারই থাকে নতুন কোন চেষ্টা, নতুন কোন কিছু সৃষ্টি
করার। ঠিক তেমনি বর্তমান বিশ্বের নানান রকম উন্নতিরও ধরন পরিবর্তন হয়েছে বা
বিশ্বে আগের তুলনায় ঠিক এখন উন্নয়নের ধারা পাল্টে গেছে বহু।এখন বিশ্বের সমগ্র
জাতির প্রতিটাই শুধুমাত্র অবকাঠামের উপর ভিত্তি নয়, একটি দেশ বা একটি জাতি
তারা আগের তুলনায় কতটা উন্নয়নশীল হতে পেরেছে কিংবা সেই জাতি কতটা প্রযুক্তি
এর জন্য যোগ্য, নাগরিকতা কতটা স্মার্ট নাগরিকতায় পরিণত হয়েছে এবং তাদের
প্রশাসন কতটা কঠিন হয়েছে ও কাজীয় এবং কার্যকর হয়েছে এরকম সকল টেকসই বিষয়
নিয়েই একটি দেশের উন্নয়ন মেরুদন্ড নির্ধারণ হয়।
স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে স্মার্ট নাগরিকতার গুরুত্ব
আরো পড়ুন ঃ সকালে যে ১০ টি খাবার খেলে ওজন বাড়ে
বাংলাদেশ স্মার্ট রাষ্ট্রের প্রণীত হতে স্মার্ট সিটিজেন শীপ একটি গুরুত্বপূর্ণ
স্তম্ভ। কেননা স্মার্ট নাগরিকতা বলতে বোঝায় প্রতিটি দেশের প্রতিটি নাগরিক সকল
বিষয়ে স্মার্টভাবে অর্থাৎ ডিজিটাল ভাবে দক্ষ হবে। যখন দেশের বেশিরভাগ নাগরিক
স্মার্ট কাজে দক্ষতা অর্জন করতে পারবে তখন একটি দেশ স্মার্টে পরিণত হতে অনেকটা
ধাপ এগিয়ে যায়। কারণ স্মার্ট নাগরিকতায় পারে প্রযুক্তি ব্যবহারে অধিক দক্ষ
হতে। যে কোন রাষ্ট্র ঠিক তখনই উন্নয়ন সাধন করতে পারবে যখন দেশের নাগরিকগন এর
সকল বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধি হবে এবং যেকোনো বড় পরিকল্পনা পরিকল্পনা নিলেও সেটি
সঠিকভাবে পরিপূর্ণ অথবা বাস্তবায়নে সফল হবে।
একজন নাগরিকের প্রযুক্তি ব্যবহারে দক্ষতা হতে হবে, সচেতন ও দায়িত্বশীল হতে
হবে, এবং জীবন যাপনে বিভিন্ন ক্ষেত্রে স্মার্ট উপায় ব্যবহার করতে হবে আবার
দেশের প্রতি নৈতিকতা ও মানবিকতা দেখাতে হবে। তাহলে একজন স্মার্ট নাগরিক হওয়া
সম্ভব এবং স্মার্ট নাগরিকতার মাধ্যমে স্মার্ট রাষ্ট্র হওয়াও সম্ভব।বর্তমান
বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে হলে প্রযুক্তিগত দিক থেকে অবশ্যই প্রতিটি
নাগরিকের দক্ষ হওয়া গুরুত্বপূর্ণ। কেননা স্মার্ট নাগরিক না হলে বর্তমান বিশ্বে
বা দুনিয়ায় তাল মিলিয়ে চলা অসম্ভব হয়ে উঠবে। সব মিলিয়ে বাংলাদেশে স্মার্ট
নাগরিকতা না হলে স্মার্ট রাষ্ট্রে পরিণত হওয়া কখনোই সম্ভব নয়। তাই স্মার্ট
নাগরিকতা গড়তে ইন্টারনেট, মোবাইল, সঠিক ভাবে খবর প্রচার, অফলাইন ব্যবসা থেকে
ই-কমার্স, মোবাইল ব্যাংকিং ইত্যাদি ব্যবসায় পরিণত হওয়া এ সকল বিষয়ে দক্ষতা
অর্জন করা অধিক প্রয়োজন।
স্মার্ট সরকার কিভাবে স্মার্ট রাষ্ট্র গঠন করতে পারে
বরাবরের মতো কোন রাষ্ট্র স্মার্ট রাষ্ট্রে পরিণত হতে স্মার্ট সরকারের অপরিসীম।
স্মার্ট সরকার অর্থাৎ অতীতের তুলনায় বর্তমানে অধিক উন্নয়নশীল আধুনিক
প্রযুক্তি গঠন ও অতীতের তুলনায় বর্তমানে নাগরিকদের অধিক সেবা গ্রহণসহ নানান
রকম প্রয়োজনীয় কাজ খুব সহজেই সম্পূর্ণ করার পদ্ধতি এ সকল এ কার্যক্রম গঠন করে
স্মার্ট সরকার। তাই বলা যায় স্মার্ট সরকারের ভূমিকা ছাড়া কখনো কোন রাষ্ট্র
রাষ্ট্রে পরিণত হতে পারে না। ঠিক যেমন বাংলাদেশ আগের থেকে বিভিন্ন ক্ষেত্রে এখন
অধিক মনোযোগী বা বর্তমান সরকার নাগরিকদের প্রতি সম্মান ও সহানুভূতির প্রকাশ
করে।
স্মার্ট সরকার বুঝাতে বিভিন্ন উদাহরণ রয়েছে। যেমন বাংলাদেশে নাগরিকত্ব লাভ
করতে সোজা কথায় বলতে গেলে বাংলাদেশে জন্ম নিবন্ধন করতে অতীতে যখন প্রায়
অনেকদিন সময় লেগে যেত তার সাথে আবার অধিক ঝামেলা এবং বিভিন্ন সরকারি
কর্মকর্তাকে ঘুষ দিয়ে জন্ম নিবন্ধন তৈরি করতে হতো। কিন্তু এখন সেসব কোন ঝামেলা
নাই বললেই চলে। কেউ চাইলে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে নিজেই ঘরে বসে government এর
কিছু সাহায্য নিয়ে একটি জন্ম নিবন্ধন করতে পারেন। এরকম বিভিন্ন কাজে এখন আর
কোন কাগজ নেই আছে অনলাইন অ্যাপ, ফাইল ইত্যাদি। অনলাইনের এরকম বিভিন্ন সেবার
কারণে আমাদের সময় বাঁচে এবং জীবন চলতে অধিক সাহায্য হয়। এসব কারণই পারে একটি
রাষ্ট্রকে স্মার্ট রাষ্ট্রে পরিণত করতে।
স্মার্ট অর্থনীতির মাধ্যমে স্মার্ট রাষ্ট্র গড়া
স্মার্ট অর্থনীতি ইস্মার্ট নষ্ট করার এক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। স্মার্ট
অর্থনীতি স্মার্ট রাষ্ট্র গড়ার জন্য মুখ্য একটি উদাহরণ। তোমার অর্থনীতি বলতে
এমন কিছু বোঝাই যেখানে সহজ ভাষায় বলতে মানুষ অফলাইনের কাজ এখন সেরে ফেলে। এটা
স্মার্ট অর্থনীতির ভূমিকার মত একটি উদাহরণ। ব্যাখ্যা করলে বোঝা যায় এখানে
মানুষ বাজারে বিভিন্ন ব্যবসার বদলে ঘরে বসে আয় করতে পারবে
ফ্রিল্যান্সিং,ই-কমার্স সহ নানান রকম প্ল্যাটফর্মে। আবার মুখো একটি বিষয় যেটা
হলো ব্যাংকের পরিবর্তে মোবাইলে মানি ট্রান্সফার সম্ভব। এরকম নানান কাজ বর্তমান
বাংলাদেশকে স্মার্ট এ পরিণত হতে সাহায্য করছে।
মানুষ অতীতে যেমন বিভিন্ন জায়গা কাজের জন্য ছুটে বেড়াত আরো অনেক কিছু করার
পরেও অনেক সময় অনেকের কাজ বা চাকরি হতো না। পূর্বের অর্থনীতির অর্থ ছিল শহরে
অফিস এবং কলকারখানা। তবে স্মার্ট অর্থনীতিতে এখন মানুষজন কিংবা বেশিরভাগ তরুণরা
ঘরে বসেই বাইরের দেশের ক্লায়েন্টের সঙ্গে কাজ করছে এবং সে থেকে ভালো পরিমানে
ইনকাম করছে। আবার দেশে এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে কাউকে টাকা পাঠানো অনেক
কঠিন ছিল বলা যায়। তবে এখন অনলাইন বিভিন্ন মানি ট্রান্সফার অ্যাপ বিকাশ, নগদ,
রকেট এবং উপায় সহ নানারকম উল্লেখযোগ্য অ্যাপস এর মাধ্যমেই মানুষ দেশের এ
প্রান্ত থেকে ও প্রান্তে সহজেই মিনিটের মধ্যেই টাকা পাঠাতে পারছে। মানুষ
চাইলেই বিভিন্ন আউটসোর্সিং কাজ করে এখন স্মার্ট অর্থনীতিতে দারুন চাহিদা রাখতে
পারে।
স্মার্ট সমাজ ব্যবস্থা কিভাবে স্মার্ট বাংলাদেশ করতে পারে
স্মার্ট সমাজ এটি একটি প্রযুক্তি সম্পূর্ণ এবং উদ্ভাবন ও উদ্যোগপূর্ণ জনগোষ্ঠীর
প্রতিচ্ছবি। এরকম সমাজ ব্যবস্থা ছাড়া, বাংলাদেশের বর্তমান প্রেক্ষাপট হতে মাঠে
পরিণত হওয়া অসম্ভবই বলা যায় এবং অপূর্ণতা থেকে যায়।স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে
এটির পূর্ব শর্তই হচ্ছে গঠন।স্মার্ট সমাজ প্রযুক্তির ঠিকঠাক ব্যবহারের মাধ্যমে
আমাদের জীবনযাত্রা মান দিনে দিনে উন্নতি হয়ে যাচ্ছে। কারণ মানুষ স্মার্ট
বাংলাদেশে তথ্য ও প্রযুক্তির ঠিকঠাক ব্যবহার করছে ফলে যোগাযোগ
ব্যবস্থা,স্বাস্থ্য সেবা ও সঠিক শিক্ষা সহ অন্যান্য দরকারি সেবা সমূহের মান
বেড়েই যাচ্ছে। স্মার্ট বাংলাদেশে সঠিক সুশাসনের মাধ্যমে স্মার্ট সমাজ গড়ে
উঠছে। ফলে বলাই যায় স্মার্ট সমাজ গঠন করলে স্মার্ট বাংলাদেশ গঠন করাও সম্ভব
হবে।
স্মার্ট সমাজের অর্থ সমাজের সকল বসবাসকারী নাগরিকদের উদ্ভাবন জ্ঞান থাকতে হবে
এবং উদ্যোগপূর্ণ মস্তিষ্ক থাকতে হবে। একটি স্মার্ট সামাজে প্রতিনিয়তই নতুন
কিছু উদ্ভাবনে উৎসাহিত হয়। এবং এরকম বিভিন্ন মানুষ নানারকম স্মার্ট প্রযুক্তি
এই ব্যবহার করার মাধ্যমে দিনে দিনে সমাজে নতুন সৃষ্টির সন্ধান গড়ে তুলছে। আবার
স্মার্ট সামাজ গঠন করতে অবশ্যই পরিবেশ সুন্দর হওয়া উচিত কেননা স্মার্ট সমাজ
পরিবেশ বান্ধব চিন্তা করে। স্মার্ট সমাজ এমন এক সমাজ ব্যবস্থা করে তোলে যেখানে
ধনী,গরিব, নারী-পুরুষ, শহর গ্রাম সকলেই স্মার্ট তথ্য ও স্মার্ট প্রযুক্তি
ব্যবহারে সক্ষম হয়। সমাজের এইরকম উন্নতিশীল দৃষ্টিভঙ্গি এটি স্মার্ট বাংলাদেশ
গঠন করতে এক বাস্তব রূপ ধারণ করে এবং স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে অধিক সাহায্য করে
থাকে। তাই অবশ্যই বলা যায় মাঠ বাংলাদেশ গঠন করার এই উদ্যেগটি বা স্মার্ট
বাংলাদেশ গঠনের এই স্বপ্নটি বাস্তবে রূপান্তরিত করতে স্মার্ট সমাজের ভূমিকা
অপরিসীম।
২০৪১ সালের ভিতরে জ্ঞানভিত্তিক ও উন্নয়নশীল সামাজ গঠন
আরো পড়ূন ঃ বাংলাদেশের স্তম্ভ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা
স্মার্ট বাংলাদেশের স্তম্ভ কয়টি, এ বিষয় নিয়ে ইতিমধ্যেই পুরনো আলোচনা করা
হয়ে গেছে আমাদের। কেননা মাঠ বাংলাদেশের স্তম্ভ কয়টি, এ বিষয়ে আমি বলেছিলাম
স্মার্ট বাংলাদেশের স্তম্ভ চারটি এবং এই সবগুলো নিয়েই সম্পূর্ণ আলোচনা করা
হয়ে গেছে আমাদের। তবে যতগুলো উপাদানই থাকুক বা যতগুলা লক্ষ্যই থাকুক স্মার্ট
বাংলাদেশ করতে,সবার আগে উদ্দেশ্য একটিই সেটি হলো ২০৪১ সালের ভিতরে বাংলাদেশ
একটি উন্নয়নশীল ও জ্ঞানভিত্তিক সমাজে গঠিত হবে।
বর্তমানে বাংলাদেশ সরকারের মূল লক্ষ্য বা মহাপরিকল্পনা হিসেবে এটি ধরা যায়।মূলত
এই পরিকল্পনার মূল লক্ষ্য হলো বর্তমান প্রেক্ষাপটের এই বাংলাদেশকে অর্থাৎ
ডিজিটাল বাংলাদেশকে স্মার্ট বাংলা এসে পরিণত করা।স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার এই
পরিকল্পনাটির মাধ্যমে বাংলাদেশের মানুষ বা দেশের স্মার্ট নাগরিকগণ উন্নয়নশীল
প্রযুক্তি ও উদ্ভাবনের ধারণা ব্যবহার এর মাধ্যমে গড়ে উঠতে পারে একটি টেকসই ও
সমৃদ্ধ এবং আন্তর্জাতিকপূর্ণ দেশ।
প্রযুক্তি নির্ভর শিল্প ও কৃষির মাধ্যমে স্মার্ট বাংলাদেশ গঠন
স্মার্ট বাংলাদেশের স্তম্ভ কয়টি এবং এর যে কয়টি মূলপয়েন্ট আছে এগুলা ছাড়াও
আরো অনেক বিষয় রয়েছে যেগুলা স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে অবশ্যই প্রয়োজন।যেমন
প্রযুক্তি নির্ভর। বর্তমান বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে স্মার্ট প্রেক্ষাপট তৈরি
করতে চাইলে বাংলাদেশের অধিক প্রজেক্ট নির্ভর হওয়া জরুরী। কেননা বর্তমান আধুনিক
সব তথ্য ও প্রযুক্তি, একটি রাষ্ট্র স্মার্ট গঠনে অধিক সহায়তা করে থাকে। যেমন
চাইলেই অফলাইন এ হাতের নানা রকম কাজ এখন Ai এর মাধ্যমে মিনিটের মধ্যেই খুব
সহজেই করে ফেলা সম্ভব। এটি অধিক সময় বাঁচাতে সহায়ক। এরকম নানা রকম প্রযুক্তির
নির্ভর হয়ে বিপুল পরিমাণ অর্থ আয় করা থেকে শুরু করে দেশের প্রেক্ষাপটে
বিভিন্ন ক্ষেত্রে উন্নতি সাধন করা সম্ভব। তাই আধুনিক প্রযুক্তি নির্ভর হওয়া
স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
স্মার্ট বাংলাদেশের স্তম্ভ এরমধ্যে সরাসরি কৃষি বিষয় উল্লেখ না থাকলেও
বিভিন্নভাবে কৃষিকে স্মার্ট বাংলাদেশ গঠনে সহায়তা পূর্ণ একটি দিক নানা রকম
ভাবে তুলে ধরা হয়েছে। অবশ্যই কৃষি এর উন্নতি সাধন করে মাঠ বাংলাদেশ গঠনে এক
ধাপ আগানো সম্ভব। কেননা কৃষির মাধ্যমে অধিক উদ্বোধন বৃদ্ধি করে সেগুলো বিদেশে
রপ্তানি করে বৈদেশিক মুদ্রা আয় করা সম্ভব। কৃষি ক্ষেত্রে খরচ বাঁচাতে বা কম খরচ
হতে প্রযুক্তি নানা রকম ভাবে সাহায্য করে। যেমন প্রযুক্তি ব্যবহারের সাহায্যে
সার এবং নানা রকম কীটনাশকের ব্যবহারে অপটিমাইজ করা যায় এর কারণে উৎপাদন করতে
অথবা কৃষি ক্ষেত্রে একটু কম খরচ হয়। আবার প্রযুক্তি ব্যবহারের জন্য অবশ্যই
বিভিন্ন ফসলের মান ভালো হয় এবং উন্নত হয় এবং সেগুলো বাজারে বিক্রি করতে চরম
চাহিদা সম্পন্ন হয়। কৃষিকাজে ধান কাটার জন্য অধিক মানুষকে ভাড়া করে সেখানে
খরচ করার পরিবর্তে ধান কাটা মেশিনের সাহায্যে খুবই অল্প সময়ে অনেক বিঘা ধান
কাটা হয়ে যায়। তাই বলাই যায় কৃষি ক্ষেত্রে প্রযুক্তি নির্ভর খুবই
গুরুত্বপূর্ণ এবং কৃষি একটি প্রযুক্তি নির্ভরশীল এরপর। প্রযুক্তি নির্ভরশিল্প
এবং কৃষি স্মার্ট বাংলাদেশ গঠন করতে ব্যাপক ভূমিকা রাখে।
প্রযুক্তি নির্ভর জবের মাধ্যমে স্মার্ট বাংলাদেশ
স্মার্ট বাংলাদেশের স্তম্ভ ছাড়াও এই প্রযুক্তি নির্ভর জব গুলো বাংলাদেশের
প্রেক্ষাপটকে স্মার্টে পরিণত করতে অধিক সাহায্য করছে। কারণ বর্তমান অনলাইন
প্লাটফর্মে নানা রকম বিজনেস এবং কাজ রয়েছে। উল্লেখযোগ্য কিছু গ্রাফিক ডিজাইন,
সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট সহ আরো অনেক কাজ রয়েছে বা এরকম অনেক বিষয় আছে যেগুলা
থেকে প্রচুর অর্থ আইন করা সম্ভব।বিশেষ করে এই জব্বা চাকরি গুলো তরুণদের জন্য
অধিক উপযোগী। কেননা চাইলেই অল্প বয়সেই এ কাজগুলো শুরু করা সম্ভব। ফলে তরুণদের
বেকারত্বর ফাঁদ থেকে মুক্ত হওয়া সম্ভব হবে।
তরুণদের জন্য এ সকল কাজ বেশি উপযোগী।কারণ এই কাজগুলো বা এই প্লাটফর্ম গুলো
বেশিরভাগ সবগুলোই অনলাইন ভিত্তিক হয়ে থাকে। আর এই অনলাইন ভিত্তিক কাজগুলো
বয়স্ক মানুষের জন্য বুঝে ওঠা একটু কঠিন যদি না সে অনেক পূর্ব থেকেই এ বিষয়
নিয়ে কাজ শুরু করে না থাকে। অন্যদিকে তরুণরা শুরুর দিক থেকেই এসব বিষয়গুলো
সঠিকভাবে বুঝতে সক্ষম হয়। তাই বলা যায় যে অনলাইন ভিত্তিক এই প্ল্যাটফর্মের
কাজগুলো তরুণদের জন্য বেশি উপযোগী। এইগুলার মাধ্যমে বিপুল অর্থ আয় করা সম্ভব
সেই সাথে বেকারত্ব দূর করাও সম্ভব।তার ফলে দেশের বেকারত্ব দূর হয়ে গেলে দেশ
অধিক উন্নতি সম্পূর্ণ হবে এবং স্মার্ট রাষ্ট্রে পরিণত হতে অনেকদূর পৌঁছে
যাবে।
ডিজিটাল দক্ষতার সাহায্যে কিভাবে স্মার্ট রাষ্ট্র গঠন সম্ভব
ডিজিটাল দক্ষতার সাহায্যে অনেক জায়গা বিভিন্ন শ্রমিক ও কৃষি কাজের জন্য
কৃষকদের জন্য তৈরি হচ্ছে বিভিন্ন মোবাইল অ্যাপস। যেমন কৃষি ক্ষেত্রে কখন কোন
ফসলে কি সার বা কি ওষুধ প্রয়োগ করতে হবে এগুলো সব কিছুর জন্যই রয়েছে অনলাইন
বিভিন্ন অ্যাপস সহ ইউটিউব।এসব জায়গা সার্চ দেয়ার মাধ্যমে সহজেই কেউ জেনে নিতে
পারবে এই খুঁটিনাটি বিষয়বস্তু সমূহ। আবার এই সকল কাজ সম্পর্কে জানতে বা অভিজ্ঞ
হতে যেমন অফলাইনে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে এই বিষয়ক সেবা বা প্রশিক্ষণ দেওয়া
হয়। ঠিক তেমনি অনলাইনেও এ সকল কৃষিকাজ বিষয়ক সমূহ সহ নানারকম সকল
বিষয়ক প্রশিক্ষণ এখন অনলাইনেও দেওয়া হয়।
গার্মেন্টসের বিভিন্ন শ্রমিক, রাজমিস্ত্রিতে কাজ করা বিভিন্ন মিস্ত্রি সহ একদম
ছোট পর্যায়ের হতে শুরু করে বড় পর্যায়ের সকল শ্রমিকদের দেওয়া হয় অনলাইনে
প্রয়োজন অনুযায়ী বা দরকার অনুযায়ী ঠিকঠাক প্রশিক্ষণ। সকল কাজের মাধ্যমে দিনে
দিনে মানুষের জীবন স্মার্টে পরিণত হচ্ছে। ফলে নাগরিকত্ব স্মার্ট হচ্ছে সেই সাথে
বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটও স্মার্ট হচ্ছে। যে সকল বিষয়ে দক্ষতার প্রয়োজন হতো এবং
তার জন্য অফলাইনে বিভিন্ন জায়গায় যে দক্ষতার সঙ্গে যে সকল প্রশিক্ষণ নিতে
হতো। এইসব রকম বিষয়ই ডিজিটাল দক্ষতার সাথে অনলাইনে প্রশিক্ষণ নেওয়া সম্ভব।
ডিজিটাল দক্ষতার সাহায্যে স্মার্ট রাষ্ট্র গঠন কে উপরোক্ত এই আলোচনা সমূহ
বোঝায়। কেননা কোন সাধারণ মানুষ যখন তার সুবিধার্থে অফলাইনের সাথে অনলাইনেও
ডিজিটাল ভাবে প্রশিক্ষণ নিয়ে দক্ষ হতে পারবে তখন সেটা স্মার্ট রাষ্ট্র গঠনের
একটি মূল বিষয় হয়েও দাঁড়াবে।
স্বাস্থ্য সেবা ও শিক্ষায় স্মার্ট প্রযুক্তির ব্যবহার
স্বাস্থ্য সেবায় স্মার্ট প্রযুক্তি ব্যবহার বলতে অতীতে ঐরকম অনেক রোগ রয়েছে
যেগুলো মানুষের শরীরে ঢুকলে বাংলাদেশে তেমন চিকিৎসার অভাবে মানুষ বাঁচতো না।
যেমন ধরা যায় ক্যান্সার। কিছু বছর আগেও মানুষের শরীরে ক্যান্সার ধরা পড়লো
বাংলাদেশে এই বিষয়ে এক রোগের তেমন কোনো চিকিৎসা ছিল না বললেই চলে।তবে হ্যাঁ
বর্তমান বাংলাদেশের ক্যান্সার প্রতিরোধে অনেক ডিজিটাল প্রযুক্তি সহকারে রয়েছে
অনেক স্মার্ট চিকিৎসা। যেগুলো মানুষের স্বাস্থ্য সেবায় এক উল্লেখযোগ্য
বিষয়।এরকম অনেক আধুনিক প্রযুক্তির চিকিৎসা যন্ত্র রয়েছে যেগুলো সাহায্যে
ক্যান্সার সহ নানান রকম মর্মান্তিক অসুখ বা রোগের চিকিৎসা দেওয়া হয়ে থাকে।
অতীতের তুলনায় বর্তমান প্রেক্ষাপটে যেমন বাংলাদেশে স্বাস্থ্যসেবার বিষয়টা
উন্নতি হয়েছে ভবিষ্যতে এরকম ভাবে প্রতিনিয়ত উন্নতি হতেই থাকবে। ফলে স্মার্ট
রাষ্ট্র গঠনে বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে।
আবার শিক্ষায় স্মার্ট প্রযুক্তি ব্যবহার বলতে, অতীতের সকল শিক্ষার্থী
বিদ্যালয়ে যাওয়া - আসা বাদে প্রাইভেট ছাড়া তেমন কোথাও থেকে শিক্ষা গ্রহণ
করতে পারতোনা তা সম্ভব হতো না। আবার ঘরে বসে বিভিন্ন জটিল সমস্যার সমাধান করতে
সক্ষম হতো না। সেগুলো সমাধানের জন্য বিদ্যালয়ের শিক্ষক কিংবা সেই সব বিষয়ে
জ্ঞানী লোকের কাছে যেয়ে সমাধান করতে হতো। কিন্তু এখন বাংলাদেশের বর্তমান
প্রেক্ষাপট এতটাই উন্নত হয়েছে যে পড়ালেখার যেকোনো সমস্যা ক্লাস ওয়ান থেকে
শুরু করে অনার্স মাস্টার্স পর্যন্তও সকল ক্ষেত্রের সকল সমস্যা সমূহ এর সমাধান
অনলাইনে বিভিন্ন ভাবে পাওয়া যায়। যেটা শিক্ষার উন্নতি সাধনে ব্যাপক ভূমিকা
রাখে।অনলাইনে বিভিন্ন কোর্স পাওয়া যায় যে কারণে অফলাইনে কোন কোচিং ছাড়াও
সঠিক শিক্ষা সম্ভব হয়। আবার মুহূর্তর মাধ্যমেই পড়ালেখা বিষয়ক যে কোন জটিল
সমস্যা অনলাইনে বিভিন্ন স্থানে সার্চ করলেই সমাধান পাওয়া যায়। আবার স্কুল
কলেজ ভার্সিটিতে হোয়াইট বোর্ড কিংবা ব্ল্যাকবোর্ডের পরিবর্তে প্রজেক্টর এর
মাধ্যমে ক্লাস নেওয়া যায়। যার ফলে পড়া বুঝতে বা আয়ত্ত করতে সাহায্য হয়।
স্মার্ট বাংলাদেশের স্তম্ভ কয়টি ও কি কি এ সকল বিষয়ে সকল বিস্তারিত আলোচনা
করা হলো এই পোস্টে।
আমাদের শেষ কথা
প্রিয় পাঠক আমি মনে করি বাং স্মার্ট বাংলাদেশের সম্ভব কয়টি ও কি কি এ বিষয়
নিয়ে আমরা বিস্তারিত আলোচনা করেছি। আমার মতে পোস্টে উল্লেখযোগ্য স্মার্ট
নাগরিক, স্মার্ট সরকার, মাঠ সমাজ ব্যবস্থা ও স্মার্ট অর্থনীতি স্মার্ট বাংলাদেশ
গড়তে সব থেকে বেশি সাহায্য করবে। তাই আশা করি আমার এই মতামতটি এবং উপরোক্ত সকল
আলোচনা আপনাদের,স্মার্ট বাংলাদেশ এর স্তম্ভ কয়টি ও কি কি এবং স্মার্ট বাংলাদেশ
গড়তে কোন বিষয়গুলো সব থেকে বেশি গুরুত্বপূর্ণ এ সকল বিষয় বুঝতে আপনাদের
সাহায্য হয়েছে।
আপনারা যদি উপরের এই আর্টিকেলটি পড়ে উপকৃত হয়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই আমাদের এই
আর্টিকেলটি অন্যদের সঙ্গে এবং আপনার বন্ধুর সঙ্গে শেয়ার করবেন। এতে আপনার
অন্যান্য বন্ধুগনও স্মার্ট বাংলাদেশের শেষ স্তম্ভ কয়টি ও কি কি, এসব বিষয়
বুঝতে সাহায্য বা সহজ হবে।
ক্লাসিক টেক বিডি এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন
comment url