কালোজিরা খেলে যেসব রোগ নিরাময় হয় জেনে নিন
কালোজিরার উপকারিতা অপরিসীম। কালোজিরা খেলে বিভিন্ন রোগ নিরাময় হয়।কালোজিরা
খেলে যেসব রোগ সারে তা হলো গ্যাস্ট্রিক, ডায়াবেটিস,ক্যান্সার সহ নানান রোগ। এ
সকল রোগসহ বিভিন্ন মর্মান্তিক রোগ প্রতিরোধ করা সম্ভব হয় কালোজিরা খাওয়ার
মাধ্যমে।
কালোজিরার মাধ্যমে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার বৃদ্ধি হয়। কালোজিরার গুরুত্ব বা
কালোজিরার উপকারিতা অপরিসীম। কালোজিরা একটি প্রাকৃতিক উপাদান। নিচে কালোজিরা
খেলে যেসব রোগ নিরাময় হয় এ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।
পোস্ট সূচীপত্র : কালোজিরার উপকারিতা কি কি , বিস্তারিত
- কালোজিরার উপকারিতা গুলো কি কি
- কালোজিরা চিবিয়ে খাওয়ার উপকারিতা
- সকালে খালি পেটে কালোজিরা খেলে কি উপকার হয়
- কালোজিরার পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া ও সাবধানতা
- টানা ৭ দিন কালোজিরা খেলে কি হয়
- কালোজিরা খাওয়ার নিয়ম
- মধুর সঙ্গে কালোজিরা মিশিয়ে খেলে কি উপকার হয়
- কালোজিরার বিভিন্ন ঔষধি গুনাগুন
- গর্ভাবস্থায় নারীদের কালোজিরা খাওয়া যাবে কিনা
- আমাদের শেষ কথা
কালোজিরার উপকারিতা গুলো কি কি
কালোজিরার উপকারিতা কি? এই প্রশ্নটি করলে অনেক উত্তর সামনে ভেসে আসে।কেননা
কালোজিরার মধ্যে রয়েছে বিভিন্ন রোগ নিরাময়ের ক্ষমতা। এর ছোট ছোট দানাগুলো
হাজার হাজার রোগ নিরাময়ের মহা ঔষধ। কালোজিরা রান্নার স্বাদ বাড়াই। তবে এ
বিষয়টা বাদ দিলেও এটি আমাদের শরীরের ভিতরের বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধ করতে সক্ষম।
কালোজিরা গুনাগুন সম্পর্কে বলতে নিলে, কিছু বিশেষ উদাহরণ রয়েছে।এর মধ্যে
সবথেকে শীর্ষ একটি বিষয় হলো কালোজিরা আমাদের হজম শক্তি বাড়ায়।কালোজিরা
ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য বহুত উপকারী। কারণ ,
ডায়াবেটিস রোগীদের রক্তের চিনি নিয়ন্ত্রণে কালোজিরা সাহায্য করে।তাছাড়া এটি
আমাদের বদহজম থেকে শুরু করে পেট ব্যথা থেকেও মুক্তি পেতে সাহায্য করে। কালোজিরা
রক্তচাপ ও কোলেস্টেরলের মাত্র কমাতে এবং হৃদরোগ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।
কালোজিরা আরো একটি বিশেষ দিক হলো, শুয়ে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করা।
কালোজিরার ছোট ছোট দানাতে ঢাকা এন্টি এক্সিডেন্ট উপাদান শরীরে ভাইরাস ও
ব্যাকটেরিয়ার প্রভাব থেকে রক্ষা করে। তাছাড়া কালোজিরা ত্বক এবং চুলের
প্রয়োজনেও ব্যবহার করা যায়।সবশেষে কালোজিরা কোনভাবে ক্যান্সার রোগ নিয়ন্ত্রণ
করতেও সক্ষম।
কালোজিরা চিবিয়ে খাওয়ার উপকারিতা
কালোজিরা চিবিয়ে খাওয়ার উপকারিতা কি? সকালে খালি পেটে এক চা চামচ কালোজিরা
চিবিয়ে খাওয়া শরীরের জন্য খুবই উপকারী। কারণ কালোজিরাতে রয়েছে ছোট আকৃতির
দানা। এই দানাগুলোর মধ্যে রয়েছে শতশত ঔষধি উপাদান। যা চিবিয়ে খেলে সরাসরি
আমাদের রক্তে সুখী তো হয় ও একবারেই কাজ শুরু করে। গ্যাস্ট্রিক বা বুক জ্বালা
এর সমস্যা থাকলে, কালোজিরা চিবিয়ে খেলে এই সমস্যাটি ভালোভাবে নিরাময় করা
সম্ভব। অনেকের খালি পেটে গ্যাস বা পেট ফাঁপা হয়। নিয়মিত কালোজিরা চিবিয়ে
খেলে এ সকল সমস্যা হ্রাস করা যায়। যারা কালোজিরা প্রথমবার গ্রহণ করে তখন
কালোজিরার স্বাদের কারণে মানুষ কিছুটা বিরক্তি হতে পারে। তবে প্রতিনিয়ত সেবন
করলে অভ্যাসে পরিণত হলে আপনি এর সুবিধা পাবেন। এটি আপনার লিভারকে সক্রিয়
রাখে এবং
শরীর থেকে সকল বিষাক্ত পদার্থ বা উপাদান বের করে দিতে সাহায্য করে। কালোজিরা
ডায়াবেটিস রোগীদের বিভিন্নভাবে সাহায্য করে। কালোজিরা চিবানোর এই প্রক্রিয়া
ইনসুলিন নিঃসরণে সহায়তা করে এবং শর্করার ভারসাম্য বজায় রাখে। যেসব রোগীদের
উচ্চ রক্তচাপ রয়েছে তারা কালোজিরা সেবন করলে সেই চাপ কিছুটা কমে। হৃদপিন্ডের
স্বাস্থ্য বজায় থাকে। কালোজিরা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা আরো বেশি শক্তিশালী ভাবে
গড়ে। ফলে সর্দি, কাশি ও ঠান্ডা এর মত ভাইরাস সংক্রমণ রোগের বিরুদ্ধে অনেকটা
সুরক্ষা পাওয়া যায়। কালোজিরা চিবানোর সবথেকে উপকারী বিষয়টি হলো, এটির সকল
কাজ একসঙ্গে করে। অর্থাৎ কালোজিরা খেলে আমাদের যা উপকার হয় তার সকল কিছুই
সম্ভব চিবিয়ে খাওয়ার মাধ্যমে। কেননা চিবিয়ে খাওয়ার মাধ্যমে এটি সরাসরি
আমাদের শরীরে প্রবেশ করে। তারপর মুখের লালার সঙ্গে সমগ্র শরীর ছড়িয়ে
পড়ে।
সকালে খালি পেটে কালোজিরা খেলে কি উপকারিতা হয়
সকালে খালি পেটে কালোজিরা খাওয়ার অনেক ফলাফল রয়েছে। যেকোনো ব্যক্তি সহজেই
সকালে খালি পেটে কালোজিরা শোষণ করতে পারে। পেট খালি থাকা অবস্থায় কালোজিরার
ক্ষুদ্র দানাগুলো খেলে এর প্রভাব বা এর উপকার সহজেই পাওয়া যায়। প্রথমত বলা
যায়, খালি পেটে কালোজিরা খেলে হজম শক্তি বৃদ্ধি পায়। রাতের ঘুমের সময় পেটে
জমা হওয়া এসিড এবং গ্যাস দূর করতে এটি অনেক সাহায্য করে। এরকম অনেক ব্যক্তি
আছে যাদের সকালে ঘুম থেকে ওঠার পরপরই গ্যাস্ট্রিক বা বদহজম এর মতো সমস্যা হয়ে
থাকে। যদি,
কোন ব্যক্তি সকালে খালি পেটে কালোজিরা খায়,তাহলে এই সকল সমস্যা সহজেই দূর করা
সম্ভব। তাছাড়া খালি পেটে কালোজিরা খাওয়া ডায়াবেটিসের জন্য খুবই কার্যকর
প্রমাণিত হয়েছে। এটি রক্তে শর্করা মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে এবং শরীরকে ইনসুলিনের
প্রতি আরো সংবেদনশীল করে তুলে। রক্তচাপের সমস্যা আক্রান্তদের জন্য এটি উপকারী।
কারণ কালোজিরা রক্তনালীতে চাপ কমায় ও এটি হৃদপিণ্ডকে সুস্থ অবস্থায় রাখে।
এরকম নানান রকম সমস্যার সকল সমাধান সকালে খালি পেটে কালোজিরা খাওয়ার মাধ্যমে
পাওয়া যায়। আবার,
সকালে খালি পেটে কালোজিরা খাওয়ার আরো একটি উল্লেখ যোগ্য সুবিধা হলো, রোগ
প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করা।সকালে খালি পেটে কোন কিছু সঙ্গে না মিশে শুধু
কালোজিরা খাওয়া যায়। কারণ এতে থাকা ছোট দানাগুলোর উপাদান খুব সহজেই শরীরে
প্রবেশ করে থাকে। আর যে কোন ধরনের ভাইরাস বা ব্যাকটেরিয়া এবং ছত্রাক এর
বিভিন্ন ক্ষতিকারক প্রভাব থেকে রক্ষা করতে পারে। তাছাড়া এটি ত্বক পরিষ্কার
রাখে ও চুল পড়া পর্যন্তও কমায়।তাছাড়া শরীরের নানান রকম বিষাক্ত পদার্থ দূর
করে। এটি সারাদিন শরীরকে শক্তিশালী বা টিকে থাকতে সাহায্য করে। সবশেষে খালি
পেটে কালোজিরা খাওয়ার পরবর্তীতে নাস্তা করার আগে কিছুক্ষণ অপেক্ষা করতে হবে।
না হয় কালোজিরা খাওয়ার সাথে সাথে নাস্তা করলে পেটে বিভিন্ন সমস্যা তৈরি হতে
পারে।
কালোজিরার পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া ও সাবধানতা
কালোজিরার আধেও কি কোন সাবধানতা রয়েছে? এমন প্রশ্ন মনে আসতেই পারে। কেননা
কালোজিরা আমাদের স্বাস্থ্য সবল ভাবি বেড়ে উঠতে নানানভাবে সাহায্য করে।
কালোজিরা বিভিন্ন রোগের জন্য একটি প্রাকৃতিক এবং ইতিবাচক উপাদান। তবে যদি এটিও
সঠিকভাবে, সঠিক নিয়মে ও সঠিক পরিমাণে না খাওয়া যায়। তাহলে এর কিছু পার্শ্ব
প্রতিক্রিয়াও হতে পারে। তাহলে বোঝা যায় কালোজিরা এর স্বাস্থ্যগত সকল ভালো দিক
থাকলেও, এর পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া এবং সর্তকতা সম্পর্কেও আমাদের জানা উচিত।
যেমন,
প্রথমত কালোজিরা অতিরিক্ত পরিমাণে গ্রহনের ক্ষেত্রে এটি পেটের সমস্যা দেখা দিতে
পারে। ডায়রিয়া, পেট ব্যথা বা বমি বমি ভাব হতে পারে। খালি পেটে অতিরিক্ত
পরিমাণে কালোজিরা গ্রহণ করলে আপনার অ্যাসিডিটি বা অস্বস্তি বোধ হতে পারে।
কালোজিরা রক্তপাত জনিত রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে বিপদজনক হতে পারে।
তাছাড়া, যদি আপনার রক্ত কমানোর জন্য ওষুধ খেতে হয়। অর্থাৎ আপনি রক্ত কমানোর
ওষুধ গ্রহণকারী রবি হয়ে থাকলে আপনার জন্য কালোজিরা ক্ষতি কর হতে পারে। কারণ
এটি আপনার রক্ত চাপ চরম মাত্রায় কমিয়ে দেওয়ার সম্ভাবনা রাখে। এর ফলে আপনার
হাই পোটেশন এর ছবি তৈরি হবে।
এমন কিছু লোক রয়েছে যাদের এলার্জি রোগ রয়েছে। তারা যদি কালোজিরার তেল ব্যবহার
করে তাহলে তাদের ত্বকে চুলকানি আরো বেড়ে যাবে। ফুসকুড়ি বা জ্বালাপোড়া অনুভব
হবে। তাই কালোজিরার তেল প্রথমবার ব্যবহারের আগে অল্প খানিক জায়গায় প্রয়োগ
করে নেওয়া ভালো।
কালোজিরার কিছু সতর্কতার টিপস :
- দিনে ১ থেকে ২ চামচের বেশি খাওয়া উচিত নয়
- শিশুদের জন্য খুবই অল্প মাত্রায় ব্যবহার করা উচিত
- প্রতিদিন ব্যবহার না করে মাঝে কিছুদিন বিরতি নেওয়া উচিত
- ওষুধের সঙ্গে মিশিয়ে লব্যবহার করার আগে ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত
টানা ৭ দিন কালোজিরা খেলে কি হয়
আপনি কি জানেন সপ্তাহে টানা ৭ দিন কালোজিরার উপকারিতা কি ? অর্থাৎ টানা সাত দিন
কালোজিরা খেলে আমাদের শরীরে কি উপকারিতা সাধন হয়। কালোজিরার দানাগুলো অতি
ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র হলেও, এই ক্ষুদ্র দানাগুলোর কার্যকরিতা অনেক। সাত দিন কালোজিরা
খেলে আপনার শরীরে এমন কিছু অবিশ্বাস্য পরিবর্তন লক্ষ্য করবেন যা আপনি কখনও
কল্পনাও করেননি। চলুন জেনে নেওয়া যাক সপ্তাহে সাত দিনের মধ্যে কালোজিরা খেলে
কোন কোন দিন কি উপকার হবে।
আপনি যদি সপ্তাহে টানা সাত দিন কালোজিরা খান, তাহলে প্রথম ২-৩ দিনে আপনার
পাকস্থলী দ্রুত পরিষ্কার হয়ে যাবে। কারণ, কালোজিরার মধ্যে রয়েছে
অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং ক্ষতিকারক বিরহী বিভিন্ন উপাদান যা আপনার পেট পরিষ্কার
রাখতে সাহায্য করে। আবার কালোজিরা খাওয়ার ৪-৫ দিন এর মধ্যে আপনার শরীরে এমন
কিছু শক্তি যোগাবে। যার মাধ্যমে সর্দি-কাশি এবং ফ্লু জনিত সমস্যা গুলো প্রতিরোধ
করতে সক্ষম হবেন। এছাড়া,
এটি আমাদের শ্বাসনালী খুলে দেয় এবং বুক এবং গলার জালা দূর করতে সাহায্য করে।
আবার,এটি মানসিক ভাবে আমাদের মন, মেজাজ উত্তেজনাপূর্ণ করে তোলে। আমাদের সকল
কাজে মনোযোগ বৃদ্ধি করায়।আবার কালোজিরা সেবনের ৬-৭ সাতদিন পর বা সাত দিনের
মধ্যে আমাদের রক্তের শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ হয়। এটি বিশেষ করে ডায়াবেটিস
রোগীদের জন্য অধিক সহায়ক। এছাড়া এটি আপনার ত্বক পরিষ্কার করতে এবং চুল পড়া
কমাতে সাহায্য করে থাকে। যাদের মাথাব্যথা, মাইগ্রেন সহ ক্ষুদা না লাগার মতোও
সমস্যা রয়েছে তাদের এসব সমস্যা সাত দিন কালোজিরা খাওয়ায় অনেকটা নিয়ন্ত্রণে
চলে আসবে।
কালোজিরা খাওয়ার নিয়ম
কালোজিরা খাওয়ার মাধ্যমে আমাদের শরীরে নানান রকম উপকারিতা সাধন হয়। তবে এটি
আমাদের নানান রকম উপকার করে থাকলেও যদি আমরা এটি সঠিক নিয়মে না সেবন করি,
তাহলে অবশ্যই আমাদের শরীরের যে কোন ক্ষতি হতে পারে। কেননা নিয়ম ছাড়া অতিরিক্ত
বা অনিয়ম কোন কিছুই ঠিক নয়। কালোজিরা খাওয়ার সবচেয়ে ভালো উপায় হলো সকালে
খালি পেটে একটা চা চামচ কাঁচা কালোজিরা চিবিয়ে খাওয়া।আবার পিষে নিয়ে অল্প গরম
পানি বা মধুতে মিশিয়েও খাওয়া যেতে পারে। এছাড়াও,
প্রতিদিন ১-২ ২ চা চামচ কালোজিরার তেল খাওয়াও স্বাস্থ্যের জন্য ভালো। এটি
আপনাদের শরীরে দ্রুত উপকারী প্রভাব ফেলবে।যেমন, হজম শক্তি ও রোগ প্রতিরোধ
ক্ষমতা বাড়ায় সেই সাথে রক্তের শর্করার মাত্রা বজায় রাখে। তবে এটি অতিরিক্ত
খাওয়া কোনভাবেই উচিত নয়। এটি প্রতিদিন ১ চা চামচ খাওয়াই উত্তম এর থেকে বেশি
নয়।আবার যখন আপনি প্রায় টানা ১০ দিনের মত এটি খাবেন অবশ্যই আপনার মাঝখানে ২
দিন করে বিরতি নেওয়া উচিত। তা না হলে অতিরিক্ত নিয়মিত সেবন করলে পেট ব্যথা বা
পেটে সমস্যা হতে পারে। সে ক্ষেত্রে আপনার ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
মধুর সঙ্গে কালোজিরা মিশিয়ে খেলে কি উপকার হয়
আপনাদের মনে প্রশ্ন জাগতেই পারে, মধুর সঙ্গে কালোজিরা মিশিয়ে খেলে কি উপকার
হয়? বলতে গেলে মধু এবং কালোজিরা উভয়ই আমাদের শরীরের জন্য নানান ভাবে
উপকারী। কেননা মধু, কালোজিরা দুটোই প্রাকৃতিকভাবে নানান রকম স্বাস্থ্যকর
গুনাগুন। সমৃদ্ধ। এই চটি উপাদান, অর্থাৎ মধু এবং কালোজিরার মিশ্রণ শরীরের জন্য
এক ধরনের প্রাকৃতিক শক্তি যোগিয়ে আনে। যদি ক্ষুধার্ত পেটে ১ চা চামচ কালোজিরা
গুড়োর সাথে এক চা চামচ মধু মিশিয়ে খেলে আমাদের হজম শক্তি উন্নত হয়। সেই সাথে
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অধিক বৃদ্ধি পায় ও গ্যাস্ট্রিক জনিত সকল সমস্যা কমে
যায়।
কালোজিরা এবং মধু মিশ্রণ করে খেলে আমাদের সর্দি-কাশি ও গড়া ব্যথা ইত্যাদির
ক্ষেত্রেও অধিক সহায়ক হয়। এই দুটি প্রাকৃতিক খাবারের মিশ্রণ আমাদের ত্বককে
উজ্জ্বল ও হালকা করে। শরীরকে উজ্জীবিত করে তোলে এবং মানসিকভাবে সুস্থ ও সুন্দর
মন মেজাজ করে। কালোজিরা ও মধু এর মিশ্রণ অধিক সাহায্য করে যাদের ডায়াবেটিস রোগ
রয়েছে। ডায়াবেটিস রোগীরা এই খাবারের মিশ্রণ নিয়মিত ব্যবহার করতে পারে। তবে
তার আগে তাদের ডাক্তারের কাছ থেকে পরামর্শ নেয়া উচিত।
কালোজিরার বিভিন্ন ঔষধি গুনাগুন
কালোজিরার কি কোন ঔষধি গুনাগুন রয়েছে?হ্যাঁ অবশ্যই। কালোজিরা বিভিন্ন ঔষধি
গুনাগুন রয়েছে। যা আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী। কালোজিরা সাধারণতই
আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য নানান রকম উপকার সাধন করে।তবে কিছু কিছু সময় ঔষধের
পরিবর্তেও আমরা কালোজিরা ব্যবহার করতে পারি। কালোজিরা একটি প্রাচীন সু পরিচিত
ভেষজ উপাদান। এর মধ্যে রয়েছে থাইমোকুইনোন নামক এক শক্তিশালী অ্যান্টি
অক্সিডেন্ট। যা আমাদের শরীরের কোষগুলিকে রক্ষা করে এবং কোষের ফোলা ভাব কমায়।
কালোজিরা একটি অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল বা অ্যান্টিভাইরাল প্রাকৃতিক উপাদান। যা
,
সর্দি-কাশি বা ফ্লু জনিত রোগ এবং সংক্রমণ প্রতিরোধ করে থাকে। আমাদের অনেকের
বদহজমের জন্য পেটে নানান ধরনের সমস্যা দেখা দেয়। এজন্য আমরা ডক্টরের কাছে যাই
এবং নানান রকক ওষুধ সেবন করতে হয়। তবে এসব কিছু না করেই এর পরিবর্তে কালোজিরার
মাধ্যমেই আমাদের হজম শক্তি বৃদ্ধি করতে পারি। তাছাড়া আরো নানান রকম বড় রোগ
রয়েছে। যেমন লিভার ও হৃদরোগ। এই রোগ গুলো প্রতিরোধ করতে আমাদের হাজার হাজার
টাকার চিকিৎসা এবং ওষুধ সেবন করতে হয়। তবে আপনি চাইলেই ঘরে বসেই শুধুমাত্র
নিয়মিত নিয়ম মেনে কালোজিরা খাওয়ার মাধ্যমে সকল মর্মান্তিক রোগ প্রতিরোধ করতে
পারবেন। এরকম অনেক রোগ এর প্রতিকার করতে ওষুধের পরিবর্তে কালোজিরা অধিক
কার্যকরী হয়ে থাকে। সবশেষ কালোজিরা কে সকল রোগের ঔষধ বলা হয়।
গর্ভাবস্থায় নারীদের কালোজিরা খাওয়া যাবে কিনা
গর্ভাবস্থায় নারীদের কালোজিরা খাওয়া যাবে কিনা এই বিষয়টি সরাসরি বলা কষ্টকর।
কেননা গর্ভাবস্থায় মহিলাদের খাদ্য নির্বাচনে অনেকটা যুক্তিসম্পন্ন হতে হয়।
কারণ এই সময়ের খাবার মা এবং শিশু উভয়ের জন্যই কার্যকর হতে হয়। কালোজিরা একটি
প্রাকৃতিক ফেসওয়াস উপাদান। এটি বিভিন্ন রোগের চিকিৎসায় কার্যকরী। তবে
গর্ভাবস্থায় নারীদের খাওয়ার হিসেবে কালোজিরা ব্যবহারে অবশ্যই সতর্কতা অবলম্বন
করা উচিত। রান্নার সময় অল্প কালোজিরা ব্যবহার করলে সেই খাবারে কোন সমস্যা হয়
না। তবে,
এক্ষেত্রে বেশি পরিমাণ ব্যবহার করলে অথবা কালোজিরার তেল ব্যবহার করলে জরায়ুতে
সমস্যা দেখা দিতে পারে। যা কিনা গর্ভপাতের সময় ঝুঁকি সৃষ্টি করে। তাই বুঝা
যায় যখন গর্ভবতী মহিলাদের খাবারে কালোজিরা দিবেন অবশ্যই আগে ডাক্তারের পরামর্শ
নেয়া উচিত। তবে সবশেষে খাবারে মসলা হিসেবেও কালোজিরা খাওয়া এড়িয়ে চলা উচিত।
যদিও এক্ষেত্রে সমস্যা হওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম। তবুও গর্ভাবস্থায় কোনরকম
ঝুঁকি না নেওয়াই উত্তম। উপযুক্ত খাদ্য তালিকা এবং সঠিক জ্ঞানের মাধ্যমে
নারীদের সেই সময়ে সেবা করাই,নিরাপদ মাতৃত্বের সংজ্ঞা দেয়।
কালোজিরার উপকারিতা নিয়ে আমাদের শেষ কথা
প্রিয় পাঠক, আশা করি আপনারা কালোজিরার উপকারিতা সম্পর্কে ধারণা
পেয়েছেন। আমাদের উক্ত আর্টিকেলে কালোজিরা খাওয়ার সকল নিয়মকানুন সহ
কালোজিরার উপকারিতা ও অপকারিতা এবং সাবধানতা সব বিষয়েই আপনাদের ধারণা দেওয়া
হয়েছে। আশা করি আমাদের আর্টিকেল টি পড়ার মাধ্যমে আপনারা উপকৃত হয়েছেন।
আমাদের আর্টিকেলটি আপনাদের সকল বন্ধুদের সঙ্গে শেয়ার করুন যেন তারাও, শরীরের
জন্য কালোজিরার সকল কার্যকারিতা সম্পর্কে জানতে পারে।
ক্লাসিক টেক বিডি এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন
comment url